180

 সৃষ্টিকর্তা বা আল্লাহ্ ছাড়া জীবন — এক বিশৃঙ্খল শূন্যতা


যদি ধরেও নিই—"সৃষ্টিকর্তা নেই", তাহলে জীবনের অর্থ, উদ্দেশ্য, নৈতিকতা—এই সব কিছুর ভিত্তিই নষ্ট হয়ে যায়।

প্রশ্নউত্তর (আল্লাহ ছাড়া)
আমি কে?শুধু একদলা কোষ ও রসায়ন
আমি কেন বেঁচে আছি?কোনো উদ্দেশ্য নেই, নিছক অস্তিত্ব
আমি কী করবো?যা খুশি, যেহেতু কোনো বিধি নেই
মৃত্যুর পর কী হবে?কিছুই না, সব শেষ


ফলে কী হয়?
জীবন হয় অস্থির, অর্থহীন ও উদ্দেশ্যহীন।
ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ—সব হয়ে যায় আপেক্ষিক।
মানুষ নিজের ইচ্ছামতো জীবন চালায়—যা সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে।


২. আল্লাহ্ থাকলে জীবন কেমন হয়?

আল্লাহর অস্তিত্ব আমাদের জীবনকে দেয়:

উদ্দেশ্য:

“আমি মানুষ ও জিনকে সৃষ্টি করেছি, শুধুমাত্র আমার ইবাদতের জন্য।”
সূরা যারিয়াত (৫১:৫৬)

মূল্য:

“আমি আদম সন্তানকে সম্মানিত করেছি...”
সূরা বনী ইসরাঈল (১৭:৭০)

নৈতিকতা:

ন্যায়-অন্যায়ের সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা আসে কুরআন-হাদীস থেকে।

আশা ও ধৈর্য:

“নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে রয়েছে স্বস্তি।”
সূরা ইনশিরাহ (৯৪:৬)

প্রতিদান:

ভালো কাজের প্রতিদান এবং অন্যায়ের শাস্তি রয়েছে আখিরাতে।


৩. যদি আল্লাহ না থাকতেন — তাহলে কী কী হতো?

(১) নৈতিকতার পতন হতো:

যেহেতু ভালো-মন্দ নির্ধারণের কোনো নিরপেক্ষ মানদণ্ড থাকত না, মানুষ যা খুশি তাই করতো। যেমন:

গরিবদের দমন করা হতো

দুর্নীতি হতো বৈধ

হত্যাকে কেউ “নিজস্ব মত” বলে চালিয়ে দিত

আল্লাহ্ না থাকলে, নৈতিকতার ভিত্তি হয়ে যেত কাঁদা।



(২) জীবনের উদ্দেশ্য হারিয়ে যেত:

"শুধু খাও, ঘুমাও, উপভোগ করো, মরো" — এই হতো জীবনের পুরো সারাংশ।
এতে মানুষ হত হতাশ, বিষণ্ন, আত্মকেন্দ্রিক।



(৩) মৃত্যুভয় হতো বিভীষিকা:

আল্লাহ্ না থাকলে মৃত্যুর পর কী হবে — কেউ জানত না। শুধু এক শূন্য ভয়!
কিন্তু ইসলাম শিক্ষা দেয়:

“যে মৃত্যুতে ভয় পায় না, সে জীবনকে সর্বোচ্চভাবে মূল্য দেয়।”


(৪) সামাজিক ভারসাম্য ধ্বংস হতো:

আল্লাহ্ মানুষের জন্য যে বিধান দিয়েছেন (যাকাত, দান, ইনসাফ, ক্ষমা, ধৈর্য, ন্যায্যতা)—তা না থাকলে ধনী গরিবকে পিষে ফেলত।
অন্যায়ের বিচার হতো না।
অন্য ধর্ম বা মতবাদকে সহ্য করার মনোভাব থাকত না।

৪. একজন নাস্তিকেরও হৃদয়ে "ঈশ্বরের অভাব" থাকে

অনেক বিখ্যাত নাস্তিক বিজ্ঞানী যেমন আইজ্যাক নিউটন, আইনস্টাইন—তাঁরা বলেছিলেন:

“এই জগতের সুনির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন, সৌন্দর্য ও ভারসাম্য দেখে মনে হয় এটা কোন চূড়ান্ত বুদ্ধিমান সত্তার সৃষ্টি।”

📌 অনেক সময় যারা আল্লাহ্-কে অস্বীকার করে, তারাও সংকট বা মৃত্যুমুখে পড়লে বলে,
"হে ঈশ্বর, আমাকে বাঁচাও!" — এটি তাদের আত্মার ভেতরকার স্বীকারোক্তি।


🔹 সৃষ্টিকর্তা বা আল্লাহ্ ছাড়া জীবন হতো:
একটি অন্ধকার, উদ্দেশ্যহীন, নৈতিকতা-বিহীন, বিশৃঙ্খল অস্তিত্ব

🔹 আল্লাহ্ আমাদের দেন:
জীবনের অর্থ, উদ্দেশ্য, নিয়ন্ত্রণ, শান্তি এবং আখিরাতের আশা।

🔹 তাই, আল্লাহর অস্তিত্ব শুধু একটি বিশ্বাস নয়, বরং একটি বুদ্ধিবৃত্তিক ও মানসিক প্রয়োজন।